নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের ক্রোণী অ্যাপারেলস লিমিটেড ও অবন্তী কালার লিমিটেডের চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ক্রোণী অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিক মো. ফারুক আহমেদ। সঞ্চালনায় ছিলেন শ্রমিক জাগরণ মঞ্চ কেন্দ্রীয় সভানেত্রী জিয়াসমিন আক্তার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক জাগরণ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম গোলক।
জাহাঙ্গীর আলম গোলক বলেন, “দেশজুড়ে শ্রমিক অসন্তোষের অন্যতম কারণ শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন-ভাতা না পাওয়া। ক্রোণী ও অবন্তীর প্রায় ৫ হাজার শ্রমিককে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, যা বেআইনি। অধিকাংশ শ্রমিক ৫ থেকে ৯ মাসের বকেয়া বেতন পাবে। মালিক পক্ষ এই বকেয়া পরিশোধে তালবাহানা করছে এবং শ্রমিকদের হুমকি দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন পরিশোধ না হওয়া দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘন করছে। জেলা প্রশাসন, বিকেএমইএ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গড়িমসি অত্যন্ত লজ্জাজনক। অবিলম্বে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।”
সমাবেশে শ্রমিকরা ক্রোণী ও অবন্তী গার্মেন্টসের মালিক আসলাম সানি, সিও হুমায়ুন, ইনচার্জ রিগ্যান এবং একাউন্টেন্ট রাকিবের গ্রেফতার দাবি করে। তাদের মতে, এদের গ্রেফতারের মাধ্যমেই শ্রমিকদের বেতন আদায় সম্ভব।
অবন্তী কালার লিমিটেডের শ্রমিক নেতা মো. শাহীন আলম বলেন, “শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের মজুরি বকেয়া রেখে তাদের পরিবারকে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করা হচ্ছে।”
ছাত্র জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক রাজিয়া রিয়া বলেন, “শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সব ধরনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনে তারা আরও কঠোর আন্দোলনের দিকে যাবে।”
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং বিকেএমইএ সভাপতির প্রতি অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা দাবি করেন, প্রশাসনের দেরি ও অযথা মিটিং শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখছে না।
শ্রমিকরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ না করা হয়, তবে আরও বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ক্রোণী ও অবন্তীর শতাধিক শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।