
৪ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক আলোচিত কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি। শনিবার (১ নভেম্বর) তিনি কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পান। পরে বাদ জোহর সিদ্ধিরগঞ্জ আইলপাড়া মাদ্রাসা মাঠে জানাজা ও দাফন শেষে পুলিশি প্রহরায় তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী মামলায় কারাবন্দি মতিউর রহমান মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমান (৪৮) শুক্রবার সকালে হার্ট অ্যাটাকজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পথে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মতি। এসময় উপস্থিত মুসুল্লিদের উদ্দেশ্যে তিনি তার স্ত্রীর দোষগুণ ভুলে ক্ষমার আবেদন করেন। অঝোরে কেঁদে মতি বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ মাস ধরে কারাগারে রয়েছি। এর ভেতর গতকাল আমার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করে। তার সঙ্গে আমি ৩২ বছরের সংসার জীবন কাটিয়েছি। সে সবসময় আমাকে আগলে রেখেছেন।
তিনি বলেন, আমার দুর্ভাগ্য যে আমার বড়ভাই যখন মৃত্যুবরণ করেছিলেন তখনও আমি কারাগারে ছিলাম। আজকের মতো সেই তখনও আমার অনুপস্থিতিতে আপনারা সবাই সবকিছু করেছিলেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার স্ত্রী যদি চলার পথে আপনাদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ কিংবা ভুল করে থাকে আমি তার হয়ে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। তার জন্য দোয়া করবেন। আমি তার জানাজায় অংশ নিতে পেড়েছি এটাই আমার জন্য অনেক।
স্ত্রীর মৃত্যুতে শেষবারের মতো মুখ দেখার সুযোগ দিতে মতির পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ৪ ঘণ্টার জন্য প্যারোল মঞ্জুর করেন।
এ বছরের ১২ জানুয়ারি রাতে ঢাকাস্থ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা হতে মতি ও তার ছেলে বাবুইকে গ্রেফতার করে ভাটারা থানা পুলিশের সদস্যরা। এরপর তাদের জেলহাজতে পাঠানো হলে মতির ছেলে বাবুই জামিনে মুক্তি পেলেও কারাভোগ করছেন তিনি।
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মতিউর রহমান পুলিশি প্রহরায় আইলপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে যান। বাড়িতে প্রবেশের পর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে বাদ জোহর স্থানীয় মাদ্রাসা মাঠে স্ত্রীর জানাজায় অংশ নেন এবং দাফনের পর ফের কারাগারে ফিরে যান।

