বুধবার , ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খুলনা
  6. খেলাধূলা
  7. চট্টগ্রাম
  8. জনদুর্ভোগ
  9. জাতীয়
  10. জেলাজুড়ে
  11. ঢাকা
  12. বরিশাল
  13. ময়মনসিংহ
  14. রংপুর
  15. রাজনীতি

‘দখল-চাঁদাবাজিতে’ বিলুপ্ত জেলা বিএনপির কমিটি

প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জ এক্সপ্রেস
ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ ১২:০৪ অপরাহ্ণ
BNP

একজন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য ও দীর্ঘদিন দলের হাল ধরে রেখেছিলেন আরেকজন কর্মী থেকে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে জেলার অন্যতম শীর্ষ নেতা হয়েছিলেন। বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলনেও দুইজনের ভূমিকা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম আর ত্যাগ থাকলেও আওয়ামী লীগের পতনের পর মাত্র পাঁচমাসের মাথায় অনেকটাই কলঙ্ক নিয়ে সরে যেতে হলো দুইজনকে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন গোলাম ফারুক খোকন। ২০২৩ সালের ১৭ জুন এক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নেতৃত্বে আসেন তারা। এর আগে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর তাদের দু’জনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যবিশিষ্ট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরে ২০২৩ সালের ১৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল এলাকায় দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন সভাপতি ও গোলাম ফারুক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। তখন থেকেই এই দুজন জেলা বিএনপির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তবে, জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি তারা। কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার আগেই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে দল।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মামলা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে ৩১টি অভিযোগ জমা পড়ে কেন্দ্রীয় দপ্তরে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এসব অভিযোগ তদন্তের পরই কেন্দ্র কমিটি বিলুপ্ত করেছে বলে জানান তারা। শীঘ্রই নতুন কমিটি আসবে, তবে তাতে ছিটকে পড়তে পারে পুরোনো নেতৃত্ব।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিবৃতিতে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগির নতুন কমিটি ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এই বিজ্ঞপ্তির মধ্যে দিয়ে নেতাদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এদিকে, তৃণমূলে নেতৃত্ব দেওয়া একাধিক নেতা বলছেন, গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর নেতা ও তাদের অনুসারী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মোটাদাগে দখল ও চাঁদাবাজি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নানা মাধ্যমে খবর নেন। তারপরই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই নেতার মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলনামূলক বেশি। নতুন কমিটিতে ওই নেতার থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তাছাড়া, জেলা বিএনপির নেতৃত্ব উপজেলা পর্যায়ে ‘লুটপাট, চাঁদাবাজিতে মগ্ন’ নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি।

বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জেলা বিএনপির মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের বেশকিছু ইউনিট থাকে। উপজেলা পর্যায়ে ওয়ার্ড কমিটির নেতারাও যদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা অপকর্মে যুক্ত হন তার দায় কিন্তু বর্তায় কমাণ্ডের উপর। একটা অভ্যুত্থান পরবর্তী অবস্থায় নেতৃত্ব যেমন হওয়ার কথা ছিল তা তারা পারেননি। এমনকি তারা নিজেরাও নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়েছেন এমন অভিযোগও উঠেছে। মামলা বাণিজ্যেও বিএনপির একাধিক নেতা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। সবকিছু তদন্ত করে যখন কেন্দ্র প্রমাণ পেয়েছে তখন কমিটি ভেঙ্গে দিয়েছে।’

ঢাকার পাশের গুরুত্বপূর্ণ এই জেলা কমিটি বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে ‘অপকর্মে’ জড়িত নেতা-কর্মীদের জন্য সতর্কবার্তা বলে মনে করেন এ নেতা।

শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘অস্থিতিশীল’ পরিস্থিতির সুবিধা নিয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ের বেশকিছু বিএনপি নেতা। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও তাদের ঘনিষ্ঠজনদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পরিবহন দখল, ঝুট সন্ত্রাসে সম্পৃক্ততার নাম আসে বিএনপি নেতাদের। একটি গোয়েন্দা সংস্থা কয়েকজন এলাকাভিত্তিক কয়েকজনের তালিকাও করে। তাদের মধ্যে ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁ এলাকার কয়েকজন নেতা উল্লেখযোগ্য ছিলেন।

এদিকে, জেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে কারা আসতে পারেন, এ প্রশ্নও করা হয়েছে একাধিক বিএনপি নেতার কাছে। বিএনপি নেতারা বলেন, এ বিষয়ে এখনো কিছু চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দু’জন বাদ পড়ার সম্ভবনা দেখছেন তারা। তরুণ নেতাদের মূল্যায়নের আভাসও মিলছে।

সর্বশেষ - জেলাজুড়ে

আপনার জন্য নির্বাচিত