নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) ট্রান্সপোটেশন মাস্টার প্লান প্রকল্পের অংশীজনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নগর ভবন অডিটরিয়ামে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নগর পরিকল্পনাবিদ মইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় নাসিক প্রশাসক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, সচিব (উপ-সচিব) মো. নূর কুতুবুল আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ। আরও উপস্থিত ছিলেন, যাত্রী অধিকার ফোরামের সভাপতি রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম, নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাড. এবি সিদ্দিক, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি নূর উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু ইউসুফ খান টিপু, জামায়াতে ইসলামী মহানগর আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার, সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, ন্যাপ সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ইসলামী আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি আহমেদুর রহমান তনু, সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ্বাস, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জেলা সাধারণ সম্পাদক ফারুক মহসিন প্রমুখ।
সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নারায়ণগঞ্জে চলমান পাঁচটি প্রকল্প বিষয়ে আলোচনা করা হয়। প্রকল্পগুলো হলো কদমরসুল সেতু, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েল রেলগেজ, খানপুরে অভ্যন্তরীনণ কন্টেনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ, পঞ্চবটি হতে মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্থকরণ ও দোতলা রাস্তা নির্মাণ এবং নারায়ণগঞ্জ সদরে মেট্রোরেল। অনুষ্ঠানের প্রথমেই প্রকল্প পরিচালকরা প্রকল্প বিষয়ে সংক্ষিপ্ত প্রেজেনটেশন উপস্থাপন করেন।
এর পরপরই প্রকল্পগুলো আগামীতে কিভাবে শহরের যানজট আরও বৃদ্ধি করবে এ বিষয়ে আলোচনা করে কিছু সম্ভাব্য সমাধান তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) ট্রান্সপোটেশন মাস্টার প্লান প্রকল্পের টিম লিডার মাহবুবুল বারি এবং প্রকল্প প্ল্যানার আব্দুল আল ফাহাদ।
সভায় বক্তারা শহরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন।
বক্তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জে প্রতিবছর ৪৯ শতাংশ হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে আগামীতে শহরের জনসংখ্যা তিন কোটির কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। এ বিষয়ে বক্তারা মন্তব্য করেন, শহরের যানজট সমস্যার সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রয়োজন, যা ভবিষ্যতে বৃহত্তর উন্নয়ন ও জনসংখ্যার চাপ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
তারা আরও বলেন, শহরের বর্তমানে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেগুলোর সমাধান আগে দিতে হবে। প্রকল্পগুলো যেহেতু আগামী ১০০ বছরের জন্য পরিকল্পিত, তাই বর্তমানে সবার আগে জরুরি সমস্যাগুলোর মোকাবেলা করা প্রয়োজন।
রিকশার লাইসেন্স প্রদান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বক্তারা জানান, সরকার এখনও রিকশার লাইসেন্স দেওয়ার জন্য কোনো বৈধ নীতিমালা তৈরি করেনি। তাই, প্রশাসকের পক্ষ থেকে যে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তা অবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানানো হয়।
কিছু বক্তা প্রকল্পগুলোর স্বচ্ছতা এবং সঠিক ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে জনসাধারণের প্রকৃত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে এবং কোনো ধান্দাবাজি বা অপব্যবহার হওয়া উচিত নয়।
অপরদিকে, শহরের ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বক্তারা জানান, সড়কে মাটি ফেলে রেখে তা পরে বিক্রি করা হচ্ছে, যা নগরবাসীর জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তারা দাবি করেন, শহরের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন এবং জনগণের সুবিধা নিশ্চিত করতে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে।