নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে। সাগর প্রধান নিজের বলয়কে ভারী করে তোলার জন্য কোনো রকমের যাচাই-বাছাই না করেই যাকে তাকে যুবদলে পুনর্বাসন করছেন। এ নিয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল পর্যাযের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট পরবর্তীত পরিস্থিতির পর থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন। সেইসাথে যুবদলের ব্যানারে দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিচ্ছেন।
সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে ছিল বিএনপি। আর এই ক্ষমতার বাইরে থাকাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবার পরিজন ছেড়ে দিন পার করেছেন। অনেক সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা বাড়ি থাকতে পারলেও তাদের সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সময় কাটতো আদালতের এক বারান্দা থেকে আরেক বারান্দায়।
এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। যে আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি বিএনপি নেতাকর্মীরাও পরোক্ষভাবে অংশহগ্রহণ করেন। ছাত্রসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী প্রাণ হারান। সেইসাথে শেষ গত ৫ আগস্ট দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন।
শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। তৃণমূল পর্যায়েও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আড়াল হয়ে পড়েন। তবে আড়াল হয়ে যাওয়া অনেকেই আবার বিএনপির নেতাকর্মীদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আবার কিছু কিছু বিএনপি নেতাও তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন। আর এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন সাগর প্রধান।
এর আগে, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট রাতে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটির অনুমোদন দেন। আর এই কমিটিতে আহ্বায়ক পদে মনিরুল ইসলাম সজল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান ও সদস্য সচিব পদে আছেন শাহেদ আহমেদ।
এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। মাঝে মধ্যে একসাথে আসলেও বেশিভাগ সময়ই আলাদা ব্যানারে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। সেইসাথে এবার ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সুযোগে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের নিজ দলে ভিড়িয়ে বলয় ভারী করার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে সাগর প্রধান বলেন, আমরা রাজনীতি করি আমাদের সাথে অনেকেই এসে ছবি তুলতে পারে। অনেকেই ব্যানার ফেস্টুন করতে পারে। ছবি আর ব্যানার ফেস্টুন থাকলেই আমার লোক হয়ে যাবে না। আমি যদি কারও জন্য তদবির করি তাহলে সে আমার লোক হতে পারে। কেউ এরকম কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না আমি আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী সমর্থকের জন্য সুপারিশ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমার ডানে বামে যারা থাকে তারা এসকল ছবি তুলে নিজেদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করতে চায়। আমি কোথাও চাঁদাবাজি করতে যাইনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই। আমার কারণে অনেকের চাঁদাবাজি করতে সমস্যা হতে পারে। যার কারণে তারা এসকল ছবি তোলে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।