নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পর দ্রুত এ কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্র। ইতোমধ্যে পদ প্রত্যাশী একাধিক নেতার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। নতুন বছরের শুরুতেই চমক দেখিয়ে জেলা বিএনপির নয়া কমিটি আসতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্র। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত শেষে এ সংক্রান্ত কমিটি কেন্দ্রের কাছে কমিটি বাতিলের সুপারিশ করলে কেন্দ্র কমিটি বাতিল করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে দলের একাধিক সূত্র নতুন কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রের কাজ শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছে। এর মধ্যে কয়েক দাপে ফরম্যাট প্রস্তুত করেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে যাচাই করে একটি ফরম্যাটের কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘোষণা হতে পারে শোনা যাচ্ছে।
এদিকে সভাপতি পদ নিয়ে ধোয়াশা দেখা গেলে ও সকল ফরম্যাটে যোগ্যতা অনুষ্ঠিত সদস্য সচিব বা সাধারণ সম্পাদক পদে আদিষ্ঠ হতে বসেছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুল ইসলাম রাজীব। এদিকে শোনা যাচ্ছে সাবেক বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন এবার সভাপতির দায়িত্ব পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তার নেতা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর মাধমে জোরদার লবিং করিযে যাচ্ছে। এদিকে জেলা বিএনপির সাবেক যোগ্য সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তার নেতৃত্বে নারায়গঞ্জ জেলা বিএনপি ছিলো গতিশীল, সকল বাধা উপক্ষো করে দীর্ঘ ১৪ বছর পর সম্মেলনসহ ইউনিট কমিটির মাধ্যমে চমক এমনকি এ ছাড়া রাজধানীর ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জের সভা সমাবেশগুলোতে হ্যামিলিউনের বাঁশি ওয়ালার মতো ডাকে ডাকে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম করতেন এই গিয়াস উদ্দিন।
কিন্তু গঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন গত ৫ আগস্টের পরই লুটপাটে মগ্ন হয়ে উঠেন, যাকে ঠেকাতে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন তাকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করলে ঢাকায় বিএনপির সর্বশেষ পোগ্রামে খোকন জেলা বিএনপির ব্যানারের নিচে না এসে সংগঠনে একটি দ্বন্দ্ব লেগে রয়েছে যার প্রধান দেন। কিন্তু পরবর্তীতে তার স্বার্থেই তিনি আবার গিয়াসের সাথে একত্রিত হয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্র কাঠামো ৩১ দফা বাস্তবায়নের দিনব্যাপী আলোচনা হলে সেখানে তিনি তার পাশে এসে বসেন। আর সারাদিন একসাথে থেকে তাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই এটার বহিপ্রকাশ ঘটান। কিন্তু তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ লন্ডন পছন্দ পৌঁছে যাওয়ায় দিন শেষে ভেঙে পরে কমিটি। কিন্তু বর্তমানে নয়া কমিটির চমক দেখতে চান নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে এর বাহিরে ও সাবেক সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দু, মোশারফসহ আরো বেশ কয়েকজন সরব হওয়ায় চমক আসতে পারে জেলা বিএনপিতে।
সূত্র বলছে, গত ২০২২ সালের (১৫ নভেম্বর) জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন দায়িত্ব পাওয়ায় ইউনিট কমিটি থেকে শুরু করে ১৪ বছর পর কমিটির সম্মেলন ও জেলা বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে তার ছায়া ছিলো সর্বপ্রধান। যাকে ঘিরে আবারো তার নেতৃত্বে জেলা বিএনপির দায়িত্ব হওয়ার আশঙ্কা দেখছেন অনেকেই। তা ছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব একজন মেধাবী ছাত্রনেতা। সরকারি তোলারাম কলেজের ছাত্র ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হয়ে মুল রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। পরে ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। পরে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও স্থান পায়। জেলা তৃণমূল ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কাছে তিনি আইডল।
বিএনপির প্রতিটি আন্দোলনে সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন তিনি। ২০১৫ সালের ৫ই জানুয়ারি বিএনপির আন্দোলনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। পরে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় রাজিবকে। রাজনৈতিক ভাবে নারায়ণগঞ্জ সদর , সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লাসহ জেলার বিভিন্ন থানায় রাজিবের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। এসকল মামলায় একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে মাসের পর মাস আসামি হয়ে কারাগার ভোগও করেছেন তিনি। বিগত দিনে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক পদে আসতে চাইলে ও তারেক রহমানের নির্দেশে তিনি বসে খোকনকে একবার চান্স দেন। তবে দলের ঐক্যবদ্ধতার প্রশ্নে সেদিন রাজীবের সেই ত্যাগ বা ' দেয়ার বিষয়টি নিজ চোখেই অবলোকন করেছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনে যুক্ত থেকে তারেক রহমান রাজীবের ওই ত্যাগকে বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন।এদিকে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন বছরের শুরুতেই ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।